এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে ডিজিটাল রূপান্তর ত্বরান্বিত করবে হুয়াওয়ে

এবছর ‘হুয়াওয়ে কানেক্ট’ –এ এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে ভবিষ্যতে ইন্টেলিজেন্ট সোসাইটি তৈরিতে প্রবৃদ্ধিশীল ইকোসিস্টেম গঠন এবং সমস্যা কেন্দ্রিক সমাধান প্রদানের বিষয়টির ওপর গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। এ নিয়ে গত শুক্রবার এই অঞ্চলের সাংবাদিকের সাথে এক অনলাইন কনফারেন্সে ডিজিটাল রূপান্তর ও এতে নিজেদের ভূমিকার কথা তুলে ধরেছে হুয়াওয়ে।

বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় এই প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের মতে, তাদের নতুন কাজের ধরণে একটি ডিজিটাল ইকোসিস্টেম তৈরি করা হবে, যা বিভিন্ন খাতে কানেকটিভিটি, কম্পিউটিং, ক্লাউড, এআই ও অ্যাপ্লিকেশনসমূহের মধ্যে একটি সমন্বয় তৈরি করবে।

এ বিষয়ে হুয়াওয়ে এশিয়া প্যাসিফিকের ভাইস প্রেসিডেন্ট জে চেন বলেন, ‘২০২০ সালে বিশ্বব্যাপী ফাইভজি নেটওয়ার্কের বিস্তার ঘটেছে, ফলশ্রুতিতে কানেকটিভিটি, কম্পিউটিং, ক্লাউড, এআই ও অ্যাপ্লিকেশন খাতে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে তৈরি হয়েছে এক ডিজিটাল রুপান্তরের অপার সম্ভাবনা’। তিনি বলেন, ‘এই পাঁচটি টেক ডোমেইনের সমন্বয় পরিবহন, ফাইন্যান্স, এনার্জি কিংবা অন্য যেকোনো খাতের কাঠামোকে পুরোপুরি পাল্টে দিতে পারে এবং এটি এ অঞ্চলের জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টি করবে’।

আইডিসি ওয়ার্ল্ডওয়াইড সেমিঅ্যানুয়াল ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন স্পেন্ডিং গাইড অনুসারে, এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে ২০১৯ সালে ডিজিটাল রূপান্তর বাবদ ৩৮০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি অর্থ ব্যয় করা হয়েছে। ২০১৭ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে এর বাৎসরিক কম্পাউন্ড গ্রোথ রেট ১৭.৪ শতাংশ হতে পারে বলে আশা করা যাচ্ছে।

জে বলেন, ‘এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধমান অর্থনীতি, যেখানে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৬০ শতাংশ মানুষের আবাসন এবং মোট ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর প্রায় ৫০ শতাংশের অবস্থান এ অঞ্চলে। আমাদের এই অঞ্চল শুধু যে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন বিকাশ ঘটানোর জন্য আদর্শ তাই নয়, বরং একটি সুষ্ঠু সমন্বয়ের মাধ্যমে আধুনিক প্রযুক্তির সর্বোচ্চ উপযোগিতা ব্যবহার করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার অভুতপূর্ব সুযোগ এখানে রয়েছে।’

ডিজিটাল রূপান্তরের গুরুত্বকে অনুধাবন করতে পেরে হুয়াওয়ে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে ইকোসিস্টেম সম্প্রসারণে ধারাবাহিকভাবে নানা কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছে।

শুক্রবারে অনুষ্ঠিত এশিয়া প্যাসিফিক অ্যাসেন্ড ইকোসিস্টেম অনলাইম ফোরামে হুয়াওয়ে জানায়, অ্যাপাক অ্যাসেন্ড পার্টনার প্রোগ্রামের উদ্দেশ্য উদ্ভাবনী ও টেকসই ইকোসিস্টেম তৈরি করা, যা ইতোমধ্যেই একশ’র বেশি আইএসভি পার্টনারের সাথে কাজ করছে এবং এ অঞ্চলে হায়ার লার্নিং ইনস্টিটিউট এবং সরকারি সংস্থার সাথে ২৭টি এমওইউ করেছে।

উদ্ভাবনী শক্তিসম্পন্ন ও টেকসই এআই ইকোসিস্টেম গঠনের উদ্দেশ্যে করে সক্রিয় তাদের এপিএসি অ্যাসেন্ড পার্টনার প্রোগ্রাম ১০০টিরও বেশি আই এসভি পার্টনার পেয়েছে এবং সমগ্র অঞ্চলব্যাপী ২৭টির বেশি হায়ার লার্নিং ইন্সটিটিউশন ও সরকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে এমওইউ স্বাক্ষর করেছে।

ওয়ার্কফোর্স চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হুয়াওয়ে মালয়েশিয়াতে হুয়াওয়ে আসিয়ান অ্যাকাডেমি, সিঙ্গাপুরে এআই অ্যাকাডেমিসহ গোটা এশিয়া প্যাসিফিক জুড়ে হুয়াওয়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে, যার মাধ্যমে প্রযুক্তি বিষয়ে মেধাবীদেরকে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ দিয়ে ভবিষ্যতের কর্মক্ষেত্রকে আরও শক্তিশালী করে তোলা যায়। এখন পর্যন্ত হুয়াওয়ে এই অঞ্চলে ১০৩টিরও বেশি আইসিটি অ্যাকাডেমি প্রতিষ্ঠা করেছে। অনুষ্ঠানে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চল থেকে অন্তত দুই লক্ষ পেশাদার আইসিটি কর্মী তৈরি করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন জে চেন।
পরবর্তী ধাপে হুয়াওয়ে এর সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে এক হয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে নতুন নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবন ও প্রয়োগ নিয়ে কাজ করবে, যার ফলে ব্যবসায়ের প্রবৃদ্ধি আসবে এবং এই অঞ্চলের দেশসমূহের সরকারগুলোরও নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রাসমূহ অর্জনের পথ ত্বরান্বিত হবে।

‘এই পাঁচটি টেক ডোমেইনের সমন্বয় শুধু যে হুয়াওয়ের জন্যই সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দেবে তা নয়, বরং সামগ্রিকভাবে প্রতিটি খাতকে উন্নয়নের নতুন পথ দেখাবে। উৎকর্ষের এই নতুন ধারাকে হুয়াওয়ে একা ব্যবহার করতে চায় না, বরং এর সকল সহযোগী প্রতিষ্ঠানের সাথে এক হয়ে এর সুযোগ ও সুবিধা উপভোগ করতে চায়’, বলেন জে চেন।

সংশ্লিষ্ট সংবাদ